চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেই অভিষেক। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অলিগলি এখনো তার চেনা হয়নি। তার মধ্যেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আলাদা করে নিজেকে চেনাচ্ছেন পাকিস্তানের ওপেনার ফকর জামান। ব্যাট হাতে বড় ইনিংস না খেলেও যে নজরকাড়া যায় তা আরেকবার প্রমাণ করলেন পাকিস্তানের তরুণ। অভিষেকের পর তিন ম্যাচে ৩১, ৫০, ৫৭ রানের ইনিংস তিনটি সংখ্যায় বড় না হলেও তার টেকনিক আর মারকুটে ব্যাটিং যেন মনে করিয়ে দিচ্ছে সাইদ আনোয়ার কিংবা ইমরান নাজিরের কথা।
আসরের প্রথম ম্যাচে সুযোগ না হলেও দ্বিতীয় ম্যাচে তার গায়ে পাকিস্তানের জার্সি তুলে দেয় টিম ম্যানেজমেন্ট। ফকর জামান আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন প্রথম ম্যাচ থেকেই। এখন পর্যন্ত যে তিনটি ম্যাচে খেলেছেন প্রতিটিই ছিলো পাকিস্তানের বাঁচ-মরার ম্যাচ, অর্থাৎ হারলেই বিদায়। এমন চাপের ম্যাচে তার ব্যাট নির্ভয়ে শাসন করেছে প্রতিপক্ষ বোলারদের। বাহারি সব শট আর নিখুঁত টেকনিক ছিলো দেখার মত। প্রথম ম্যাচে প্রোটিয়া পেসারদের সামনে তার ৩০ বলে ৩১ রানের ইনিংসটি মুগ্ধ করেছে দর্শকদের। ছোট্ট ইনিংসে ছিল ৬টি চারের মার. যার প্রতিটিতেই সুনিপুণ ক্রিকেটীয় কারুকাজ। দ্বিতীয় ম্যাচে লঙ্কান বোলাদের ওপর রীতিমত ‘তরবারি’ চালিয়ে দলকে এনে দিয়েছেন উড়ন্ত সূচনা। ৩৬ বলে ৫০ রানের ইনিংসে ছিলো ৮টি চার ও একটি ছক্কার মার।
সর্বশেষ আজ বুধবার কার্ডিফে যেন শুরু করেছেন আগের ম্যাচে যেখান থামছিলেন সেখান থেকেই। আরেক ওপেনার আজহার আলীর সাথে তার ১১৮ রানের জুটিতেই এদিন ফাইনালে খেলা অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায় পাকিস্তানের। শুরু থেকেই পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যাটিং করেছেন। এদিন পিচ বোলারদের পক্ষে কথা বলেছে, তাই ফকর ছিলেন আগের দুই ম্যাচের তুলনায় কিছুটা সংযমী। যদিও প্রথম ওভারেই মার্ক উডকে বিশাল এক ছক্কা হাকিয়ে খুলেছেন রানের খাতা। ৫৮ বলে ৫৭ রানের ইনিংসে বাউন্ডারি ছিলো ৭টি।
পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের সমস্যা ওপেনিংয়ে অনেক দিন পর আশার আলো দেখাচ্ছেন দেশটির উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের এই তরুণ। এই প্রদেশের মারদান শহরে জন্ম তার, যেখান থেকে উঠে এসে পাকিস্তানের ব্যাটিংকে নতুন করে লিখেছেন সদ্য বিদায় নেয়া ইউনুস খান। ফকর কতদূর যেতে পারবেন সেটি সময়ই বলে দেবে। তবে ইউনুস খানের শহরের এই তরুণ তুর্কি যে পাকিস্তানকে আশার আলো দেখাচ্ছেন তা অস্বীকার করার উপায় নেই।
Comments
Post a Comment