Skip to main content

অস্ট্রেলিয়ার বিদায়, স্বপ্নের সেমিতে বাংলাদেশ See More at: http://www.shokalerkhobor24.com/news/9664-%E0%A6%85%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A7%9F%2C-%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%87-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6

মাশরাফি বললেন সমর্থনটা অব্যাহত রাখুন, আমরা সর্বস্ব নিংড়ে দেব




















স্টোকস ও মরগানের নৈপুণ্যে এজবাস্টনে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বৃষ্টি আইনে ইংল্যান্ড জিতেছে ৪০ রানে। ফলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি থেকে বিদায় অস্ট্রেলিয়ার। ছবি : এএফপি
এউইন মরগান বাংলাদেশে যেতে চাচ্ছিলেন না। বাংলাদেশ অনিরাপদ বলে।
তাই প্রায় গণশত্রু। সেই অপবাদ ঘোচাতেই কি না ব্যাট করলেন যেন বাংলাদেশের হয়ে।বেন স্টোকসের সঙ্গে সেদিন তামিমের এমন লেগে গিয়েছিল যে বাংলাদেশি দর্শকরা ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ বলে 
ওকে খেপিয়ে গেছে। সেই ‘ভুয়া’ই আজ চরম বাংলাদেশবন্ধু।দুই ‘বাংলাদেশবিরোধী’ ‘বাংলাদেশপ্রেমী’ হয়ে এমন ব্যাট করলেন যে তার আঘাতে ৪০ রানে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে অস্ট্রেলিয়া ছিটকে গেল। খালি চোখে এটা দেখল ক্রিকেট-বিশ্ব আর আমরা দেখলাম সেই ব্যাট দুটি দিয়ে তৈরি তরিতে পা রেখে কিভাবে বাংলাদেশ চলে গেল স্বপ্ন-দরজা পেরিয়ে। বিশ্ব আসরের সেমিফাইনাল, তাও ইংল্যান্ডের মতো বিরুদ্ধ কন্ডিশনে এবং অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডকে টপকে, যতবার লিখতে চাই ততবার যেন হাত কাঁপে। মনে হয়, একটু পর কি-বোর্ড চেপে ভুলটা শুদ্ধ করতে হবে!আসলে করতে হবে না। এ এক অক্ষয় কীর্তি। 

যেকোনো অর্জনেই একটা মাত্র যোগ করে সেটাকে বড় করে দেখানোর কাজ বহুকাল ধরে করে আসছে বাংলাদেশের মিডিয়া। আজ আর কিছু যোগ করতে হচ্ছে না। ক্রিকেটের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসরে সেরা চারের এক দল হয়ে যাওয়ার এমন কীর্তি যা সূর্যের আলোর মতো স্পষ্ট, সব পাপড়ি মেলা ফুলের মতো সুবাসিত, কল্পনার সব রং ছড়িয়ে তৈরি এক স্বপ্নলোক। যে স্বপ্নলোকে পা রাখা মাশরাফিকে বিহ্বল দেখায়। তবে আবেগীয় হাওয়া সরিয়ে রেখে ক্রিকেটীয় দৃঢ়তায় দাঁড়াতে চান অধিনায়ক, ‘এটা বিরাট একটা ব্যাপার। বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অর্জন। আমরা ধাপে ধাপে উন্নতি করছি। ওই ম্যাচেও ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চাই। সুযোগ এসেছে। যত দূর সম্ভব কাজে লাগাতে হবে। ’ দুটি মাত্র ম্যাচ, পেরোতে পারলেই...! মাশরাফি না উড়ে চলতে চান মাটিতে পা রেখেই, ‘কেউ যেন এখনই আমাদের চ্যাম্পিয়ন না ভাবে। অত প্রত্যাশা না করে আমরা এগোতে চাই একে-একে। এখন ভাবছি সেমিফাইনাল নিয়ে। যেই হোক প্রতিপক্ষ লড়াইটা করতে হবে সর্বস্ব নিংড়ে।

সেই সেমিফাইনালে ওঠার পথে মানুষের আবেগ আর সমর্থনটা যে জরুরি জ্বালানি ছিল সেটা অকৃত্রিম কৃতজ্ঞতায় স্বীকার করে অধিনায়কের চাওয়া, ‘দেশবাসীর প্রতি অনুরোধ, সমর্থনটা অব্যাহত রাখুন। ’
দূরত্ব কমানোর জন্য নিজেদের হাতে যে সুযোগ ছিল সেটা আগের দিন করে রেখেছিল বাংলাদেশ। এরপর যে কিছু নিজেদের হাতে নেই। বহু দূরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া আর ইংল্যান্ড খেলছে আর অস্থির আগ্রহে অপেক্ষায় বাংলাদেশ। দুপুরে মাঝ বিরতির সময় পার্ক প্লাজা হোটেলের নিচে দাঁড়িয়ে হাতুরুসিংহে বারবার করে জানতে চাইছেন, যেখানে যাচ্ছেন সেখানে ওয়াইফাই আছে কি না? ইংল্যান্ডে ওয়াইফাই আছে কি না এটা জানতে চাওয়া আর আমাদের ভাতের রেস্টুরেন্টে ডাল পাওয়া যায় কি না এই প্রশ্ন করা একই কথা। তবু হাতুরুসিংহে নিশ্চিত হতে চান, এ জন্য যে একটা বলও যেন মিস না হয়।
হাতুরুসিংহের মতো দুপুরের এই সময়ে একে একে বের হচ্ছিলেন সবাই। নইলে ইনিংস যতক্ষণ চলছিল ততক্ষণ কাউকে পাওয়া যায়নি। বিস্ময়কর শোনাবে কিন্তু এটাই সত্য যে বাংলাদেশ দল যে হোটেলে আছে সেখানে রুমে টিভিতে খেলা দেখার সুযোগ নেই। ইংল্যান্ড বাংলাদেশ নয় যে আড়াই শ টাকা ডিশ বিল দিয়ে বৈধ-অবৈধ সব চ্যানেল দেখা যাবে। খেলা দেখাচ্ছে স্কাই স্পোর্টস, খুব দাম দিয়ে কিনতে হয় বলে বেশির ভাগ জায়গাতেই নেই। এমনকি নেই পাঁচ তারকা হোটেলেও। তবু বাংলাদেশের খেলা দেখতে অসুবিধা ছিল না, কারণ আইসিসি থেকে একটা একটা ওয়াইফাই কড দেওয়া হয়েছে দলগুলোকে। টিভিতে সেটা লাগিয়ে টুর্নামেন্টের খেলাগুলো দেখা সম্ভব। পার্ক প্লাজা হোটেলের মিটিং রুম তাই কালকের বাংলাদেশের কাছে হয়ে গেল সূর্যসেন হলের টিভি রুমের মতো। সবার একসঙ্গে খেলা দেখার সুযোগ। ইংল্যান্ডের সাফল্যে উত্তেজিত হওয়া। অস্ট্রেলিয়ার ব্যর্থতায় আনন্দিত। নিজেরা খেললে অন্য দেশকে আর সমর্থন করার ব্যাপার নেই। খেলোয়াড়দের তো প্রশ্নই ওঠে না। তবু বাংলাদেশের 
খেলোয়াড়রা বহুদিন পর সমর্থক হয়ে গেলেন। সবাই যে একসঙ্গে এসে খেলা দেখেছেন এমন নয়, কিন্তু যে বা যারা ছিলেন না তাদের প্রত্যেকের মাথায়ও অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড ম্যাচই শুধু। হাতে মোবাইল। ক্রিকইনফো খোলা। একটি বলও মিস করার প্রশ্ন নেই।
ইনিংস শেষ হলেই মাশরাফি নেমে এলেন লবিতে। সমবেত সাংবাদিকদের সঙ্গে আড্ডা মারা মাশরাফির খুব পছন্দের একটি জিনিস। সেই আড্ডায় যথারীতি ম্যাচ প্রসঙ্গ। অস্ট্রেলিয়া হারবে কি না—এ প্রশ্নে রসিকতা করে ‘অন্যের খারাপ চাইতে ভালো লাগে না’ জাতীয় কথা বললেও বোঝা গেল অধিনায়কের চিন্তাতেও শুধু্ই ইংল্যান্ডের জয়। আর অস্ট্রেলিয়া ৩০০ করার জায়গা থেকে শেষ দিকে ছিটকে গিয়ে ২৭৭-এ অলআউট হওয়াতে স্বস্তিও দারুণ। বললেন, ‘এই রান তো ইংল্যান্ডের করা উচিত। ’ হাতুরুসিংহেরও বিশ্বাস, ‘এটা করার মতো স্কোর। ভেরি মাচ গেটেবল। ’ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন থিলান সামরাবীরা। এ টুর্নামেন্টে ব্যাটিংয়ের হালচাল যা দেখছেন, তাতে ওভালে ২৭৮ না হওয়ার কারণ দেখেন না। যেমন বিশ্বাস আগের দিনের জয়ের অন্যতম নায়ক মোসাদ্দেক। কোনো একটি প্রসঙ্গে বলছিলেন, ‘এখন সেমিফাইনালে যাব কি না সেটা নির্ভর করছে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড ম্যাচের ওপর। অস্ট্রেলিয়া ২৭৭ রান করেছে। দেখা যাক!’ কেউ একজন এরপর জানতে চাইল, ‘ম্যাচটি তিনি অনুসরণ করছেন কি না?’ এ প্রশ্ন করার কী আছে এমন ভঙ্গিতে মোসাদ্দেকের উত্তর, ‘ম্যাচের দিকে খেয়াল না রাখলে কী করে জানলাম ওরা ২৭৭ করেছে। ’ এমনিতে নিজেদের ম্যাচের বাইরে ক্রিকেট এবং ক্রিকেটগত ভাবনায় বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা খুব আগ্রহী নয় বলে টিম ম্যানেজমেন্টের একটি আফসোস আছে। কালকের বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা সেই ‘অপবাদমুক্ত’ হয়ে চূড়ান্ত ক্রিকেটপ্রেমী।
পরশুর ম্যাচের পর খুব বড় পার্টি হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু এখন এত ঘনঘন জেতা হয় বলে ঠিক আগের মতো মেতে ওঠার ব্যাপার নেই। তবু কালকের জয় তো অন্য রকম। দর্শকরা উচ্ছ্বাস করেছে প্রায় সারা রাত। সমস্যা হলো সকাল সাড়ে ১০টায় খেলা শুরু হয় এখানে, তারপর ম্যাচ শেষ হওয়ার পর সংবাদ সম্মেলন ইত্যাদি মিলে হোটেলে ফিরতে ফিরতে ৮টা বেজে যায়। ইংল্যান্ডে এখন সূর্য ডোবে রাত সাড়ে ৯টায়, কাজেই সময় ছিল তার পরও। কিন্তু এখন যে রোজার মাস। ম্যাচের দিন না পারলেও বাকি দিনগুলোতে রোজা রাখার চেষ্টা করেন অনেকে। যারা রাখে না তাদের কাছেও এ মাসের পবিত্রতা খুব মূল্যবান। তাই ম্যাচ শেষে ল্যাপ অব অনার, ড্রেসিং রুমে ‘আমরা করব জয়’ এর কোরাসের মধ্যেই সীমিত ছিল আয়োজন। তাহলে কি সেমিফাইনালের জন্য জমানো উৎসবটা জমানো থাকল? এই প্রশ্নে আবার কেউ খুব তাল মেলাচ্ছেন না। এবং তাল মেলানোও আসলে উচিত নয়। সেমিফাইনালে ওঠা গেছে, এখন শুরু করতে হবে নতুন করে। উৎসবের চিন্তায় মত্ত না হয়ে মাঠের ক্রিকেটে মনোযোগটাই বেশি জরুরি। পরশু ম্যাচ শেষে বেরোনোর সময় আইসিসির মিডিয়া কর্তা রাজেশ বলছিলেন, ‘তোমরা বাংলাদেশি সাংবাদিকরা পার্টি করবে না? করলে আমাকে আমন্ত্রণ করো। ’ ইংল্যান্ডে সময়ের পার্থক্যের কারণে খেলা শেষে বাংলাদেশি সাংবাদিকদের খবর পাঠানোর এমন তাড়া থাকে যে রাজেশের জন্য পার্টি করার সময় থাকে না। তবে এর মধ্যেও রাজেশ বললেন একটা মূল্যবান কথা, ‘তোমাদের এই জয়টা পুরো টুর্নামেন্টের জন্যই দারুণ হলো। ’
তখন ব্যস্ততায় হ্যাঁ-হুঁ করে পার করে দিয়েছি কিন্তু এক দিন পর মনে হচ্ছে সত্যি বললে, বাংলাদেশ তো সেমিফাইনালে উঠে টুর্নামেন্টকেই বাঁচিয়ে রাখল। এমনিতে ইংল্যান্ডে ফুটবলের ভিড়ে ক্রিকেটের জায়গাই নেই। পত্রিকাগুলোতে ইংল্যান্ডের ম্যাচের খবরটাই যা একটু যায়, বাকিগুলো একেবারে যাকে বলে সিঙ্গেল কলাম। কার্ডিফ বা ওয়েলসে আবার ফুটবলের সঙ্গে আছে রাগবিও। বাংলাদেশের জেতার খবরটা কাল কার্ডিফে স্থানীয় একটি পত্রিকা তন্নতন্ন করে শেষে আণুবীক্ষণিক একটা জায়গা থেকে খুঁজে বের করলাম। মাঠে উপস্থিত ছিল ছয় হাজার ৭০০ দর্শক, যখন সেটা মাইকে ঘোষণা হলো তখন বাংলাদেশি এক সাংবাদিক বললেন, ‘এর মধ্যে ছয় হাজারই বাংলাদেশের, এটাও বলে দাও। ’ মাইকে সেটা না বললে সত্যি বললে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিকে বাঁচিয়ে রেখেছি আমরা। আমাদের দর্শক। আমাদের উত্তেজনা। তার সঙ্গে আমাদের ক্রিকেট যোগ হয়ে ট্রফিটাকে মনে হচ্ছে যেন নিজেদেরই। এই টুর্নামেন্টের জন্ম বাংলাদেশে, উন্মাদনাও বাংলাদেশের এসব কিছু মিলে বাংলাদেশ আর টুর্নামেন্টটা এমন এক রঙে মিশে যায় যে মনে হয় সেমিফাইনাল খেলে আমরা একা ধন্য হব না। টুর্নামেন্টও হবে। ক্রিকেটও হবে।
আর তাই কাতরের মতো শুধু সেমিফাইনাল নিয়ে ভাবতে ইচ্ছা করে না। ভাবতে ইচ্ছা করে আরো বড় করে। ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ যে বাংলাদেশের কাছে সেটা তো আমরা জানতামই। এবার বাকি দুনিয়াকেও জানিয়ে দেওয়া গেল।  
আর সঙ্গে চুপি চুপি মাথায় আসছে আরেকটা ছবি। মরগানের উন্নাসিকতার কথা বলছিলাম, অস্ট্রেলিয়ার উপেক্ষার কথাও মনে আছে। কী ভাগ্য, সেই অস্ট্রেলিয়াকে বাংলাদেশের সঙ্গে খেলতে হলো যেদিন লন্ডন পৃথিবীর সবচেয়ে অনিরাপদ শহর বলে গণ্য। আর অদৃশ্য নিয়তি ওদের আত্মম্ভরিতার হিসাবটা যেন মিলিয়ে মুঠো থেকে গ্রাসটা কেড়ে নিয়ে। আর সেই ১ পয়েন্টের সিঁড়ি বেয়েই এগোয় বাংলাদেশের রথ।
না, আর বেশি কিছু চাই না। এটুকুতেই চলবে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে পয়েন্টটা পাওয়ার পর থেকেই মনে হচ্ছে কোনো এক জাদুর ছোঁয়া যেন সোনালি ছায়ায় ঘিরে রেখেছে বাংলাদেশকে।
সোনালি ছায়ায়-জাদুর ছোঁয়ায় হতে পারে কত কী! থাক, এখন আর না বলি।খেলোয়াড়রা বহুদিন পর সমর্থক হয়ে গেলেন। সবাই যে একসঙ্গে এসে খেলা দেখেছেন এমন নয়, কিন্তু যে বা যারা ছিলেন না তাদের প্রত্যেকের মাথায়ও অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড ম্যাচই শুধু। হাতে মোবাইল। ক্রিকইনফো খোলা। একটি বলও মিস করার প্রশ্ন নেই। ইনিংস শেষ হলেই মাশরাফি নেমে এলেন লবিতে। সমবেত সাংবাদিকদের সঙ্গে আড্ডা মারা মাশরাফির খুব পছন্দের একটি জিনিস। সেই আড্ডায় যথারীতি ম্যাচ প্রসঙ্গ। অস্ট্রেলিয়া হারবে কি না—এ প্রশ্নে রসিকতা করে ‘অন্যের খারাপ চাইতে ভালো লাগে না’ জাতীয় কথা বললেও বোঝা গেল অধিনায়কের চিন্তাতেও শুধু্ই ইংল্যান্ডের জয়। আর অস্ট্রেলিয়া ৩০০ করার জায়গা থেকে শেষ দিকে ছিটকে গিয়ে ২৭৭-এ অলআউট হওয়াতে স্বস্তিও দারুণ। বললেন, ‘এই রান তো ইংল্যান্ডের করা উচিত। ’ হাতুরুসিংহেরও বিশ্বাস, ‘এটা করার মতো স্কোর। ভেরি মাচ গেটেবল। ’ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন থিলান সামরাবীরা। এ টুর্নামেন্টে ব্যাটিংয়ের হালচাল যা দেখছেন, তাতে ওভালে ২৭৮ না হওয়ার কারণ দেখেন না। যেমন বিশ্বাস আগের দিনের জয়ের অন্যতম নায়ক মোসাদ্দেক। কোনো একটি প্রসঙ্গে বলছিলেন, ‘এখন সেমিফাইনালে যাব কি না সেটা নির্ভর করছে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড ম্যাচের ওপর। অস্ট্রেলিয়া ২৭৭ রান করেছে। দেখা যাক!’ কেউ একজন এরপর জানতে চাইল, ‘ম্যাচটি তিনি অনুসরণ করছেন কি না?’ এ প্রশ্ন করার কী আছে এমন ভঙ্গিতে মোসাদ্দেকের উত্তর, ‘ম্যাচের দিকে খেয়াল না রাখলে কী করে জানলাম ওরা ২৭৭ করেছে। ’ এমনিতে নিজেদের ম্যাচের বাইরে ক্রিকেট এবং ক্রিকেটগত ভাবনায় বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা খুব আগ্রহী নয় বলে টিম ম্যানেজমেন্টের একটি আফসোস আছে। কালকের বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা সেই ‘অপবাদমুক্ত’ হয়ে চূড়ান্ত ক্রিকেটপ্রেমী। পরশুর ম্যাচের পর খুব বড় পার্টি হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু এখন এত ঘনঘন জেতা হয় বলে ঠিক আগের মতো মেতে ওঠার ব্যাপার নেই। তবু কালকের জয় তো অন্য রকম। দর্শকরা উচ্ছ্বাস করেছে প্রায় সারা রাত। সমস্যা হলো সকাল সাড়ে ১০টায় খেলা শুরু হয় এখানে, তারপর ম্যাচ শেষ হওয়ার পর সংবাদ সম্মেলন ইত্যাদি মিলে হোটেলে ফিরতে ফিরতে ৮টা বেজে যায়। ইংল্যান্ডে এখন সূর্য ডোবে রাত সাড়ে ৯টায়, কাজেই সময় ছিল তার পরও। কিন্তু এখন যে রোজার মাস। ম্যাচের দিন না পারলেও বাকি দিনগুলোতে রোজা রাখার চেষ্টা করেন অনেকে। যারা রাখে না তাদের কাছেও এ মাসের পবিত্রতা খুব মূল্যবান। তাই ম্যাচ শেষে ল্যাপ অব অনার, ড্রেসিং রুমে ‘আমরা করব জয়’ এর কোরাসের মধ্যেই সীমিত ছিল আয়োজন। তাহলে কি সেমিফাইনালের জন্য জমানো উৎসবটা জমানো থাকল? এই প্রশ্নে আবার কেউ খুব তাল মেলাচ্ছেন না। এবং তাল মেলানোও আসলে উচিত নয়। সেমিফাইনালে ওঠা গেছে, এখন শুরু করতে হবে নতুন করে। উৎসবের চিন্তায় মত্ত না হয়ে মাঠের ক্রিকেটে মনোযোগটাই বেশি জরুরি। পরশু ম্যাচ শেষে বেরোনোর সময় আইসিসির মিডিয়া কর্তা রাজেশ বলছিলেন, ‘তোমরা বাংলাদেশি সাংবাদিকরা পার্টি করবে না? করলে আমাকে আমন্ত্রণ করো। ’ ইংল্যান্ডে সময়ের পার্থক্যের কারণে খেলা শেষে বাংলাদেশি সাংবাদিকদের খবর পাঠানোর এমন তাড়া থাকে যে রাজেশের জন্য পার্টি করার সময় থাকে না। তবে এর মধ্যেও রাজেশ বললেন একটা মূল্যবান কথা, ‘তোমাদের এই জয়টা পুরো টুর্নামেন্টের জন্যই দারুণ হলো। ’ তখন ব্যস্ততায় হ্যাঁ-হুঁ করে পার করে দিয়েছি কিন্তু এক দিন পর মনে হচ্ছে সত্যি বললে, বাংলাদেশ তো সেমিফাইনালে উঠে টুর্নামেন্টকেই বাঁচিয়ে রাখল। এমনিতে ইংল্যান্ডে ফুটবলের ভিড়ে ক্রিকেটের জায়গাই নেই। পত্রিকাগুলোতে ইংল্যান্ডের ম্যাচের খবরটাই যা একটু যায়, বাকিগুলো একেবারে যাকে বলে সিঙ্গেল কলাম। কার্ডিফ বা ওয়েলসে আবার ফুটবলের সঙ্গে আছে রাগবিও। বাংলাদেশের জেতার খবরটা কাল কার্ডিফে স্থানীয় একটি পত্রিকা তন্নতন্ন করে শেষে আণুবীক্ষণিক একটা জায়গা থেকে খুঁজে বের করলাম। মাঠে উপস্থিত ছিল ছয় হাজার ৭০০ দর্শক, যখন সেটা মাইকে ঘোষণা হলো তখন বাংলাদেশি এক সাংবাদিক বললেন, ‘এর মধ্যে ছয় হাজারই বাংলাদেশের, এটাও বলে দাও। ’ মাইকে সেটা না বললে সত্যি বললে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিকে বাঁচিয়ে রেখেছি আমরা। আমাদের দর্শক। আমাদের উত্তেজনা। তার সঙ্গে আমাদের ক্রিকেট যোগ হয়ে ট্রফিটাকে মনে হচ্ছে যেন নিজেদেরই। এই টুর্নামেন্টের জন্ম বাংলাদেশে, উন্মাদনাও বাংলাদেশের এসব কিছু মিলে বাংলাদেশ আর টুর্নামেন্টটা এমন এক রঙে মিশে যায় যে মনে হয় সেমিফাইনাল খেলে আমরা একা ধন্য হব না। টুর্নামেন্টও হবে। ক্রিকেটও হবে। আর তাই কাতরের মতো শুধু সেমিফাইনাল নিয়ে ভাবতে ইচ্ছা করে না। ভাবতে ইচ্ছা করে আরো বড় করে। ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ যে বাংলাদেশের কাছে সেটা তো আমরা জানতামই। এবার বাকি দুনিয়াকেও জানিয়ে দেওয়া গেল। আর সঙ্গে চুপি চুপি মাথায় আসছে আরেকটা ছবি। মরগানের উন্নাসিকতার কথা বলছিলাম, অস্ট্রেলিয়ার উপেক্ষার কথাও মনে আছে। কী ভাগ্য, সেই অস্ট্রেলিয়াকে বাংলাদেশের সঙ্গে খেলতে হলো যেদিন লন্ডন পৃথিবীর সবচেয়ে অনিরাপদ শহর বলে গণ্য। আর অদৃশ্য নিয়তি ওদের আত্মম্ভরিতার হিসাবটা যেন মিলিয়ে মুঠো থেকে গ্রাসটা কেড়ে নিয়ে। আর সেই ১ পয়েন্টের সিঁড়ি বেয়েই এগোয় বাংলাদেশের রথ। না, আর বেশি কিছু চাই না। এটুকুতেই চলবে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে পয়েন্টটা পাওয়ার পর থেকেই মনে হচ্ছে কোনো এক জাদুর ছোঁয়া যেন সোনালি ছায়ায় ঘিরে রেখেছে বাংলাদেশকে। সোনালি ছায়ায়-জাদুর ছোঁয়ায় হতে পারে কত কী! থাক, এখন আর না বলি।











Comments

Popular posts from this blog

Category «পরকিয়া চোদন কাহিনী

Bangla choti golpo রবির বয়স তখন ১৫ যখন সে কমলা আর ওর স্বামীর সাথে ওদের গ্রামের বাড়িতে থাকতে আসে।রবির বাবা-মা দুজনেই একটা দুর্ঘটনাতে মারা যান।ওদের বাড়িতে আগুন লাগে ,guda agun সেই আগুনে ওদের গোটা বাড়ি আর ওনারা জ্বলে ছাই হয়ে যান।কমলার বোন ছিল রবির মা।একমাত্র পরিবার বলতে কমলা choti মাসিই,তাই সে ওদের কাছে চলে আসে।jotil bangla choti শুরুর দিকে রবি একদম চুপচাপ থাকত,নিজের মনেই খেলা করত, কারো সাথে সেমন কথা বলতো না।পরিবারের শোকে তো এরকমই হওয়ার কথা,নিজের বাড়ির কথা হয়তো ওর খুব মনে পড়তো। রবির ১৭ বছর এর জন্মদিনের এক সপ্তাহের মাথায় কমলার স্বামী রাকেশ মারা যায়।মাঠে লাঙ্গল চালাতে গিয়ে একটা আঘাতে ওনার মৃত্যু হয়।হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই সে প্রাণ হারায়।কমলা তখন ৩২ বছরের যুবতি বিধবা, এমনকি রবির মন থেকেও আগের শোকটা মুছে যায়নি। কমলার ভাগ্য ভালো যে রবি তখন তার কাছে ছিলো তাই তাকে তার জমি জায়গা হারাতে হয়নি।তার গড়ন ভালো ছিলো,চাষেবাসে মনও তার ছিলো,সারা বছরের ফসলে তাদের গুজরান হয়ে যেত।বাড়ন্ত বয়েসে খাটাখাটুনির জন্য আরো পেটানো হয়ে যায় রবির শরীর,পেশিতে দৃঢ় তার বাহু।আঠারো বছর পেরিয়ে তাগড...

রোনালদো জিতবেন ব্যালন ডি’অর, নাইকির আর সইছে না তর!

প্যারিসের আইফেল টাওয়ারে আজ বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে নয়টায় শুরু হবে ব্যালন ডি’অর অনুষ্ঠান। কে জিতবেন ‘ফ্রান্স ফুটবল’-এর এবারের বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার? স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘মুন্দো দেপোর্তিভো’ আগেই জানিয়েছে, ব্যালন ডি’অর-জয়ীর নাম ফাঁস হয়ে গেছে! ক্রীড়া সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান নাইকিও জানে সেই বিজয়ীর নাম। আর তাই এবারের বর্ষসেরা খেলোয়াড়টির অর্জনের স্মারক হিসেবে নাইকি সীমিতসংখ্যক বুট তৈরি করেছে, যার নাম ‘কুইন্টো ট্রাইয়ুনফো’, মানে ‘পঞ্চম সাফল্যে বিশেষ সংস্করণ’। বোঝাই যাচ্ছে, পুরস্কারটি কার হাতে উঠতে যাচ্ছে। লিওনেল মেসি আর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর শোকেসে ট্রফির সংখ্যা যাদের জানা, তাদের এটা সহজেই বোঝার কথা। মেসি ইতিমধ্যেই পাঁচবার ব্যালন ডি’অর জিতেছেন। রোনালদো আজ আইফেল টাওয়ারের ওপর দাঁড়িয়ে ডেভিড জিনোলার হাত থেকে ট্রফিটা পেলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর পাশে বসবেন। ইউরোপের সংবাদমাধ্যম কিন্তু আগেভাগেই জানিয়ে দিয়েছে, এবার ট্রফিটা রোনালদোর হাতেই উঠছে। নাইকির বিশেষ সংস্করণের বুট সংবাদমাধ্যমের এই নিদানের ভিত্তিকে আরও শক্ত করল। নাইকির সঙ্গে স্পনসর চুক্তি রয়েছে রোনালদোর। রিয়াল মা...

Schoolgirl ‘abducted, raped’ for 4 days

A schoolgirl was allegedly abducted and raped in confinement for four days in Melndaha upazila of Jamalpur, reports UNB. The victim, a class-VIII student, was found near Durmuth railway station mosque in the upazila early Sunday when she was seriously ill. She was admitted to Melandaha Upazila Health Complex, said officer-in-charge of Melandaha police station Md Majharul Karim. The schoolgirl stays at her grandfather’s (mother’s father) house while her parents live in Dhaka. She said local Mozammel Hossain and his accomplices abducted her while she was going to a coaching centre at Nayanagar village on 22 November and confined her to a house. Mozammel violated the girl for four days and threw her near Durmuth railway station mosque in the early hours of Sunday, the victim said, adding that she was given milk, biscuit and juice laced with sedatives for the days. Victim’s father filed a case with Melandaha police station in this regard.