Skip to main content

নাটকীয় জয়ে সেমিতে পাকিস্তান

চার মেরে নিশ্চিত করলেন জয়। লঙ্কানদের হতাশ করে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতে উঠলেন পাকিস্তান অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ l 
লাসিথ মালিঙ্গার কপালে তাহলে এই লেখা ছিল! সরফরাজ আহমেদ মাথার ওপরে ব্যাট তুলে দিগ্‌বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে দৌড়াচ্ছেন আর তিনি শূন্য চোখে সেদিকে তাকিয়ে। এই ম্যাচ পাকিস্তান জিতে গেল!আইসিসি টুর্নামেন্টে এটাই হয়তো তাঁর শেষ ম্যাচ। ‘হয়তো’ কেন, ২০১৯ বিশ্বকাপে তো মালিঙ্গাকে কল্পনাই করা যাচ্ছে না। সেই শেষটা হলো এমন মর্মান্তিক! তাকিয়ে তাকিয়ে দেখলেন, অষ্টম উইকেটে সরফরাজ-আমিরের ৭৫ রানের জুটি কীভাবে ম্যাচটা বের করে নিয়ে গেল!তাকিয়ে তাকিয়ে দেখেননি, নিজের যথাসাধ্য করেছেন। কিন্তু নিজের দলের ফিল্ডাররাই যে মালিঙ্গার ঘোর ‘শত্রু’ হয়ে দাঁড়াল! তিন-তিনটি ক্যাচ পড়ল তাঁর বলে। এর প্রথমটি না পড়লে পাকিস্তানের উদ্বোধনী জুটি ৭৪ রানের বদলে শূন্য রানেই শেষ হয়ে যায়।
পরের দুটি পরপর দু্ই ওভারে এবং সেটিও কোন সময়ে! অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস শেষ ভরসা হিসেবে ৩৯তম ওভারে আবার বোলিংয়ে নিয়ে এসেছেন তাঁকে। পাকিস্তানের তখনো ৪৩ রান চাই জিততে। সবাই বুঝতে পারছেন, এটাই ম্যাচের নির্ধারণী মুহূর্ত। সেই মুহূর্তটা মালিঙ্গারই হওয়ার কথা ছিল। সরফরাজ স্লোয়ার বলে ধোঁকা খেয়ে মিড অনে যে ক্যাচটা তুলে দিলেন, ক্রিকেটে এর চেয়ে সহজ ক্যাচ আর হয় কি না সন্দেহ! থিসারা পেরেরা সেটিই ফেলে দিতে সক্ষম হলেন!মালিঙ্গার পরের ওভারে আবারও বেঁচে গেলেন সরফরাজ। ইয়র্কারের পর মালিঙ্গার তূণের সবচেয়ে ভয়াল তির স্লোয়ার বাউন্সারে পুল করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিলেন। বদলি ফিল্ডার সেকুগে প্রসন্ন ডিপ স্কয়ার লেগ থেকে দৌড়ে এসে সামনে ডাইভ দিয়ে বল পাওয়ার পরও সেটি ধরতে পারলেন না। নিয়তির নির্মম পরিহাসই বলতে হবে, মালিঙ্গার পরের ওভার থেকে ১১ রান তুলেই জিতে গেল পাকিস্তান। উঠে গেল সেমিফাইনালে। আগামীকাল এই কার্ডিফেই যেটিতে প্রতিপক্ষ স্বাগতিক ইংল্যান্ড।

পাকিস্তান ক্রিকেট নিজেদের অননুমানযোগ্য চরিত্রটাও আবার দেখিয়ে দিল এই ম্যাচে। সরফরাজের অপরাজিত ৬১ প্রশ্নাতীতভাবেই ‘ক্যাপ্টেনস নক’-এর মর্যাদা পাবে। কিন্তু মোহাম্মদ আমির অমন ব্যাটসম্যান হয়ে না গেলে তো তাঁর পক্ষেও এই ম্যাচ জেতানো সম্ভব হতো না। ১৬২ রানে ৭ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর সরফরাজকে সঙ্গ দিতে শুধু বোলাররাই ছিলেন। আমির আর কাউকে নামতেই দিলেন না।ব্যাটিংয়ে এই প্রত্যাবর্তনের আগে বোলিংয়েও দেখা মিলেছে হঠাৎ জ্বলে ওঠার সেই পাকিস্তানি চরিত্রের। রবি শাস্ত্রী যাতে একটুও বিস্মিত নন। ধারাভাষ্যে কাজে লাগবে ভেবেই হয়তো পরিচিত পাকিস্তানি সাংবাদিকের কাছে খোঁজখবর নিচ্ছিলেন পাকিস্তান দলের। পাকিস্তান ক্রিকেটের সোনালি সময় দেখা ওই সাংবাদিক আক্ষেপ করলেন, ‘আর দলের অবস্থা! একবার মনে করে দেখুন, আপনার সময়ে পাকিস্তান দলে কী সব খেলোয়াড় ছিল, আর এখন দেখেন কারা খেলছে!’মাঠে শ্রীলঙ্কা তখন প্রবল বিক্রমে এগিয়ে চলেছে। তিন বলের মধ্যে ২ উইকেট হারিয়ে ৩ উইকেটে ৮৩ হয়ে গিয়েছিল স্কোর। সেখান থেকে ডিকভেলা ও ম্যাথুস দারুণ এক জুটিতে ম্যাচটা ধরে ফেলেছেন। ৩১ ওভার শেষে স্কোর ৩ উইকেটে ১৬১। তিন শ খুবই সম্ভব।রবি শাস্ত্রী প্রেসবক্স থেকে কমেন্ট্রি বক্সে ফিরে যাওয়ার পথে থমকে দাঁড়ালেন। মাঠে মোহাম্মদ আমির প্রবল উল্লাসে ফেটে পড়েছেন। ম্যাথুস মিড উইকেটে ফ্লিক করতে চেয়েছিলেন, বল ব্যাটের কানা নিয়ে স্টাম্পে! ৭৮ রানের জুটি ভেঙে দেওয়াই আমিরের অমন বাঁধভাঙা উল্লাসের একমাত্র কারণ নয়। আসল কারণ, এই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে এটাই তাঁর প্রথম উইকেট! যেটি এল তাঁর ২৪তম ওভারে!

এরপর যা হলো, তা রীতিমতো ধ্বংসযজ্ঞ। পাকিস্তান ক্রিকেটের স্বর্ণযুগকে মনে করিয়ে দেওয়া দুর্দান্ত ফাস্ট বোলিংয়ে শ্রীলঙ্কার মিডল অর্ডারকে উড়িয়ে দিলেন আমির ও জুনাইদ। উইকেটকিপার সরফরাজের দারুণ এক ক্যাচে ডিকভেলাকে ফিরিয়ে দিয়ে আমিরের দ্বিতীয় উইকেট। এর আগে-পরে জুনাইদ তুলে নিলেন ধনঞ্জয় ডি সিলভা ও থিসারা পেরেরাকে। বেচারা ধনঞ্জয়! চোট পেয়ে কুশল পেরেরা ছিটকে পড়ায় মাত্র এক দিন আগেই সেই শ্রীলঙ্কা থেকে উড়ে এসেছিলেন। চার মিনিটেই তাঁর ব্যাটিং-পর্ব শেষ!মাত্র ২৩ বলে ৪ উইকেট হারিয়ে চোখের পলকে শ্রীলঙ্কা ৭ উইকেটে ১৬১! আমিরের বলে আসেলা গুনারত্নের ক্যাচটা সরফরাজ ধরতে পারলে উইকেটের ঘরে ‘৮’-ও বসে যেতে পারত! রবি শাস্ত্রী ফিরে যাওয়ার আগে ওই সাংবাদিককে বললেন, ‘আরে ইয়ার, এটাই হলো পাকিস্তান!’আমির-জুনাইদের বিধ্বংসী ফাস্ট বোলিং যদি ‘পাকিস্তান’ হয়, মাত্র ২৩৬ রান তাড়া করাটাকেই এমন কঠিন বানিয়ে ফেলাও আদি ও অকৃত্রিম ‘পাকিস্তান’। মাত্র ১১.২ ওভারে ৭৪ রানের উদ্বোধনী জুটির পর ৬৩ রানের মধ্যে ৬ উইকেট নেই। সপ্তম উইকেট যখন পড়ল, তখন এই ম্যাচে উল্টো শ্রীলঙ্কাই ফেবারিট!সেখান থেকেও পাকিস্তানই যে জিতল, তার একটা কারণ তো সেই পুরোনো কথাটা—‘পাকিস্তানকে দিয়ে সবই সম্ভব।’ তবে এই ম্যাচে এটাই কি আসল কথা? শ্রীলঙ্কার ওই ফিল্ডিং ভুলে যাবেন কীভাবে!
পাকিস্তান: ৪৪.৫ ওভারে ২৩৭/৭
ফল: পাকিস্তান ৩ উইকেটে জয়ী


Comments

Popular posts from this blog

রোনালদো জিতবেন ব্যালন ডি’অর, নাইকির আর সইছে না তর!

প্যারিসের আইফেল টাওয়ারে আজ বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে নয়টায় শুরু হবে ব্যালন ডি’অর অনুষ্ঠান। কে জিতবেন ‘ফ্রান্স ফুটবল’-এর এবারের বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার? স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘মুন্দো দেপোর্তিভো’ আগেই জানিয়েছে, ব্যালন ডি’অর-জয়ীর নাম ফাঁস হয়ে গেছে! ক্রীড়া সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান নাইকিও জানে সেই বিজয়ীর নাম। আর তাই এবারের বর্ষসেরা খেলোয়াড়টির অর্জনের স্মারক হিসেবে নাইকি সীমিতসংখ্যক বুট তৈরি করেছে, যার নাম ‘কুইন্টো ট্রাইয়ুনফো’, মানে ‘পঞ্চম সাফল্যে বিশেষ সংস্করণ’। বোঝাই যাচ্ছে, পুরস্কারটি কার হাতে উঠতে যাচ্ছে। লিওনেল মেসি আর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর শোকেসে ট্রফির সংখ্যা যাদের জানা, তাদের এটা সহজেই বোঝার কথা। মেসি ইতিমধ্যেই পাঁচবার ব্যালন ডি’অর জিতেছেন। রোনালদো আজ আইফেল টাওয়ারের ওপর দাঁড়িয়ে ডেভিড জিনোলার হাত থেকে ট্রফিটা পেলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর পাশে বসবেন। ইউরোপের সংবাদমাধ্যম কিন্তু আগেভাগেই জানিয়ে দিয়েছে, এবার ট্রফিটা রোনালদোর হাতেই উঠছে। নাইকির বিশেষ সংস্করণের বুট সংবাদমাধ্যমের এই নিদানের ভিত্তিকে আরও শক্ত করল। নাইকির সঙ্গে স্পনসর চুক্তি রয়েছে রোনালদোর। রিয়াল মা...

Category «পরকিয়া চোদন কাহিনী

Bangla choti golpo রবির বয়স তখন ১৫ যখন সে কমলা আর ওর স্বামীর সাথে ওদের গ্রামের বাড়িতে থাকতে আসে।রবির বাবা-মা দুজনেই একটা দুর্ঘটনাতে মারা যান।ওদের বাড়িতে আগুন লাগে ,guda agun সেই আগুনে ওদের গোটা বাড়ি আর ওনারা জ্বলে ছাই হয়ে যান।কমলার বোন ছিল রবির মা।একমাত্র পরিবার বলতে কমলা choti মাসিই,তাই সে ওদের কাছে চলে আসে।jotil bangla choti শুরুর দিকে রবি একদম চুপচাপ থাকত,নিজের মনেই খেলা করত, কারো সাথে সেমন কথা বলতো না।পরিবারের শোকে তো এরকমই হওয়ার কথা,নিজের বাড়ির কথা হয়তো ওর খুব মনে পড়তো। রবির ১৭ বছর এর জন্মদিনের এক সপ্তাহের মাথায় কমলার স্বামী রাকেশ মারা যায়।মাঠে লাঙ্গল চালাতে গিয়ে একটা আঘাতে ওনার মৃত্যু হয়।হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই সে প্রাণ হারায়।কমলা তখন ৩২ বছরের যুবতি বিধবা, এমনকি রবির মন থেকেও আগের শোকটা মুছে যায়নি। কমলার ভাগ্য ভালো যে রবি তখন তার কাছে ছিলো তাই তাকে তার জমি জায়গা হারাতে হয়নি।তার গড়ন ভালো ছিলো,চাষেবাসে মনও তার ছিলো,সারা বছরের ফসলে তাদের গুজরান হয়ে যেত।বাড়ন্ত বয়েসে খাটাখাটুনির জন্য আরো পেটানো হয়ে যায় রবির শরীর,পেশিতে দৃঢ় তার বাহু।আঠারো বছর পেরিয়ে তাগড...

কী ঘটেছিল খেলার শেষ মুহূর্তে?

ম্যাচের শেষ ওভারে পরপর দুটি বাউন্সার। অথচ নো বল দেননি আম্পায়ার! পরে বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের কাছে জানা গেল, লেগ আম্পায়ার নো দিতে গিয়েও দেননি! ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ আম্পায়ারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও সমাধান পাননি। বাংলাদেশ দল এটিকে ‘পক্ষপাতমূলক’ আম্পায়ারিং হিসেবে ধরে নিয়ে এর তীব্র প্রতিবাদ জানায়। বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান তো সতীর্থদের মাঠ থেকেই বেরিয়ে আসার ইঙ্গিত দেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এমন ঘটনা খুব বেশি দেখা যায় না। কী এমন হয়েছিল যে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা উত্তেজিত হয়ে পড়লেন! টিম হোটেলে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলে সেই সময়ের একটা চিত্রনাট্য দাঁড় করিয়েছেন এই মুহূর্তে শ্রীলঙ্কায় অবস্থান করা  প্রথম আলো র প্রতিনিধি  রানা আব্বাস ... মাহমুদউল্লাহ (লেগ আম্পায়ার রুচিরা পালিয়াগুরুগেকে):  স্যার, এটা কেন নো বল নয়? পরপর দুটি বাউন্সার দিল! পরেরটার উচ্চতা আরও বেশি ছিল...। (দুই আম্পায়ার কথা বলছেন মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে। গ্যাটোরেড হাতে ব্যাটসম্যানদের কাছে এলেন একাদশের বাইরে থাকা নুরুল হাসান। এ সময় থিসারা পেরেরা সিংহলিজ ভাষায় কিছু বললেন আম্পায়ারদের।) থিসারা (মাহমুদউল্লাহ...