কিশোর-কিশোরী সন্তান কি স্মার্টফোন নিয়ে দিনে পাঁচ ঘণ্টার বেশি ঘাঁটাঘাঁটি করে? তাহলে এখনই সাবধান! কারণ, এ থেকে তাদের মনে বিষণ্নতা ভর করে। এই বিষণ্নতা আত্মহত্যার মতো ভয়ংকর সিদ্ধান্ত নেওয়ার দিকে ঠেলে দিতে পারে তাদের। সম্প্রতি এক গবেষণা প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটি ও সান দিয়েগো স্টেট ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক স্মার্টফোনে ছোটদের আসক্তি নিয়ে এই গবেষণা করেছে।
ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আত্মহত্যা বিশেষজ্ঞ টমাস জয়েনার বলেন, ‘স্মার্টফোন বা অন্য ইলেকট্রনিক কোনো ডিভাইসের স্ক্রিনে অতিরিক্ত সময় কাটানোর সঙ্গে আত্মহত্যা, বিষণ্নতা, আত্মহত্যাপ্রবণ কল্পনা ও আত্মহত্যার চেষ্টা চালানোর একটি ঝুঁকিপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। মানসিক স্বাস্থ্যের এই দিকগুলো খুবই ভয়ংকর হয়। আমার ধারণা, মা-বাবাদের এখন এসব বিষয় নিয়ে চিন্তা করার সময় এসেছে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়, সন্তানেরা স্মার্টফোন বা অন্য ইলেকট্রনিক কোনো ডিভাইসের স্ক্রিনের দিকে কতক্ষণ তাকিয়ে থাকে বা ঘাঁটাঘাঁটি করে, তা মা-বাবাকে পর্যবেক্ষণ করতে বলছেন টমাস জয়েনার।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সাল থেকেই ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীদের বিষণ্নতায় ভোগা ও আত্মহত্যা করার প্রবণতা নাটকীয়ভাবে বেড়ে গেছে। বিশেষ করে কিশোরীদের ক্ষেত্রে এই হার আরও বেশি। ২০১০-১৫ সালের মধ্যে কিশোর-কিশোরীদের আত্মহত্যা করার প্রবণতার হার ৩১ শতাংশ বেড়ে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় জরিপের তথ্য, কিশোর-কিশোরীরা ভয়ংকর মাত্রায় বিষণ্নতায় ভোগার হার আগের চেয়ে ৩৩ শতাংশ বেড়ে গেছে।
গবেষকেরা বলছেন, ইলেকট্রনিক ডিভাইসের অতিরিক্ত ব্যবহারই এর জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সালের পর থেকে স্মার্টফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইসের স্ক্রিনে অতিরিক্ত সময় কাটানো কিশোরী-কিশোরীর হার ৯২ শতাংশ। স্ক্রিনে পাঁচ ঘণ্টা বা তারও বেশি সময় কাটানো ৪৮ শতাংশ কিশোর-কিশোরীর মধ্যে আত্মহত্যাপ্রবণ আচরণ লক্ষ্য করা গেছে।
সান দিয়েগো স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষক জিন টোয়েনগি বলেন, গবেষণার ফলাফলে এটাই স্পষ্ট হয়েছে, যেসব কিশোর-কিশোরী ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করে, তাদের অসুখী হওয়ার আশঙ্কাই বেশি।
গবেষকেরা বলছেন, গবেষণার এটাই নির্দেশ করে যে যারা ইলেকট্রনিক ডিভাইস ছেড়ে খেলাধুলা, ব্যায়াম, বন্ধুদের সঙ্গে মুখোমুখি আড্ডায় সময় ব্যয় করে, তাদেরই সুখী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তবে সীমিত সময়, যেমন দিনে এক বা দুই ঘণ্টা স্মার্টফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইসের স্ক্রিনে সময় ব্যয় করাটা নিরাপদ।
- Get link
- X
- Other Apps
- Get link
- X
- Other Apps
Comments
Post a Comment