Skip to main content

অন্য মেহ্জাবীনের গল্প

লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার হওয়ার পর প্রায় আট বছর ধরে নিয়মিত মডেলিং ও অভিনয় করছেন তিনি। সঠিক সময়ে শুটিং সেটে পৌঁছানো, পরিচালকের সঙ্গে সমন্বয় ও সহযোগিতায় খ্যাতি আছে তাঁর। তিনি মেহ্জাবীন। সম্প্রতি প্রথম আলোর মুখোমুখি হয়েছিলেন নিজের কিছু না-বলা গল্প বলতে। সঙ্গে ছিলেন হাবিবুল্লাহ সিদ্দিক
ফ্ল্যাটের দরজা খুললেন মেহ্জাবীন। কুশল জিজ্ঞেস করেই দেখিয়ে দিলেন বসার ঘর। আমাদের বসিয়ে দিয়ে তিনি ভেতরে গেলেন গৃহকর্মীকে ডাকতে ডাকতে। আমরা অপেক্ষায় থাকলাম তাঁর। ‘সময়নিষ্ঠ’ বলে খ্যাতি পাওয়া মেয়েটি মিনিট তিনেকের মধ্যে হাজির হলেন বসার ঘরে। শুরুতেই জানতে চাই, লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার না হলে কি কখনো অভিনয়ের জগতে আসতেন?
কিছুক্ষণ ভাবলেন, ‘সে রকম কোনো সম্ভাবনা ছিল না। আসলে ওই প্রতিযোগিতার পরপরই আমার সামনে নতুন জগৎ খুলে যায়।’ কথার ফাঁকে জানিয়ে দেন, স্কুলে পড়ার সময় খেলাধুলার দিকে ঝোঁক ছিল। কে জানে, অভিনয়ের চৌকাঠে পা না রাখলে হয়তো খেলার মাঠ দাপিয়ে বেড়াতেন তিনি। মেহ্জাবীন বলেন, ‘আমি তো দেশের বাইরে থেকে এসে প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়েছিলাম। এ কারণে ঠিক জানতাম না বিজয়ী হওয়ার পর কী কাজ হবে আমার! পরে সবার পরামর্শে মডেলিং শুরু করি।’ এটুকু বলে থামেন তিনি। শুরুতে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কোনোভাবেই অভিনয় করবেন না। সেই কথা মনে পড়তেই হাসতে হাসতে বলেন, ‘এটা বললে তো অনেকে আমাকে মারবেন। আমি দেশে এসে ঠিকমতো বাংলা পড়তে পারতাম না। ফলে চিত্রনাট্য পড়া হতো না। তাই মডেলিংয়েই থাকব বলে ঠিক করেছিলাম। পরে আস্তে-ধীরে বাংলা শিখে নিয়েছি। এখন বাংলায় প্রিন্ট করা কোনো কিছু পড়তে সমস্যা হয় না।’
পড়তে সমস্যা না হলেও লিখতে এখনো সমস্যায় পড়েন তিনি। নাটকে যদি কোনো কারণে বাংলায় কিছু লেখার দরকার পড়ে, সত্যি সত্যিই বিপদে পড়েন তিনি।
নিজে বিপদে পড়লেও মেহ্জাবীন সাধারণত পরিচালকদের বিপদে ফেলেন না। অনেক পরিচালক জানান, মেহ্জাবীন ‘প্যারা’ দেয় না!
মেহ্জাবীনসময়ানুবর্তিতা!
‘প্যারা না দেওয়া অভিনেত্রী মেহ্জাবীন!’ বাক্যটি বলার সঙ্গে সঙ্গে খিলখিল করে হেসে ওঠেন তিনি। বসারঘরের প্রতি কোণে সেই হাসি ছড়িয়ে পড়ে। ‘এটা কে কে বলেছে বলেন তো?’ জবাব দেওয়ার বদলে উল্টো প্রশ্ন করেন তিনি। যাঁরা মেহ্জাবীন সম্পর্কে এমন তথ্য দিয়েছেন, তাঁদের তালিকাটা লম্বা। সেই লম্বা তালিকায় যাওয়ার চেয়ে বরং যাঁকে নিয়ে এমন কথা ‘চাউর’, তাঁর দিকে মনোযোগী হই। ‘আচ্ছা আমি ঠিক সময়ে সেটে যাই, পরিচালকদের সমস্যায় ফেলি না—এ পর্যন্ত তো শুনেছেনই। তবে রাত ১১টার পরে যে আমি শুটিং করি না, এটা কেউ বলেনি? হা হা হা।’

আমরা বলি, নির্দিষ্ট সময়ে গেলে তো নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ হবে—এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অনিয়ম ও অনিয়ন্ত্রিত এই শহরে ঠিক সময়ে শুটিং স্পটে পৌঁছানো কী করে সম্ভব হলো?

‘চাইলেই সম্ভব? আমাকে তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরতে হবে, এই ইচ্ছা থেকেই সময়মতো সেটে যাওয়ার ব্যাপারটি চলে এসেছে। কারণ, আমি যদি সময়মতো সেটে যাই, তাহলে সময়মতো বের হতে পারব। তা না হলে দেরিতে গিয়ে একজন পরিচালককে কী করে বলব আমি নির্দিষ্ট সময়ে চলে যাব? আরেকটা ব্যাপার হলো, আমি সব সময় চাই আমার সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে কোনো পরিচালক বা শুটিং-সংশ্লিষ্ট কেউ যেন সমস্যায় না পড়েন। সেই চেষ্টাতেই এই সময় মেনে চলাটা সম্ভব হয়।’

বলেন, নির্দিষ্ট শুটিং হাউসে মেকআপসহ ঠিক ১০টায় হাজির হন তিনি। যদিও নিয়ম হলো, শুটিংয়ে গিয়ে মেকআপ নেওয়া। কিন্তু দ্রুত দৃশ্য ধারণের সুবিধার্থে বাসা থেকেই মেকআপ নিয়ে শুটিংয়ের কস্টিউম নিয়ে বের হন এ অভিনেত্রী। বলেন, ‘অন্য কোথাও আট ঘণ্টার বেশি কাজ করা হয় কি না আমি জানি না। কিন্তু আমাদের এখানে একটানা ১২ থেকে ১৩ ঘণ্টা কাজ করি। তারপর যদি অতিরিক্ত সময় থাকতে বলা হয়, তখন খুবই বিরক্তি লাগে। এ কারণেই নির্দিষ্ট সময়ে হাজির হই। তবে মাঝেমধ্যে বিব্রতকর ঘটনাও ঘটে।’

আমরা আগ্রহ নিয়ে তাকাই। কি সেটা?

এমনও হয়, ‘মেকআপ, কস্টিউম নিয়ে শুটিং স্পটে হাজির হয়েছি, দেখি পরিচালকই আসেননি।’

অভিযোগপত্র!
তবে মেহ্জাবীনের বিরুদ্ধে একটা গণ-অভিযোগ আছে। তিনি মুঠোফোনে কল রিসিভ করেন না! অভিযোগটা শুনে হাসেন তিনি। এটা তো ‘কমন’ অভিযোগ। সত্যি কথা বলতে কি, ‘আমি কিছুদিন একটানা কাজ করার পর কয়েক দিন ছুটিতে যাই। পুরো ছুটির সময় মুঠোফোন বন্ধ থাকে বা বন্ধুদের সঙ্গে থাকার সময় ফোন ধরি না।’

নিজেকে একটু অলস দাবি করে তিনি বলেন, ‘নিজের শরীর-স্বাস্থ্য ও পরিবারকে সময় দেওয়ার জন্য হলেও ছুটি নেওয়া দরকার। এটা আমার মনে হয়।’

তিনি মনে করেন, ‘একটানা শুটিং করলে খুব পরিশ্রম যায়। এ কারণে সব সময় সেরাটুকুও দেওয়া যায় না। তাই আমার সমবয়সী যেসব অভিনয়শিল্পী আছেন, তাঁদের প্রায়ই বলি, সব সময় ক্লান্ত না থেকে একটু বিশ্রাম দিয়ে কাজ করলে আউটপুটটা ভালো দেওয়া যায়।’

এবং চলচ্চিত্র...
প্রচুর সিনেমা দেখেন মেহ্‌জাবীন। এ কারণে চলচ্চিত্রের প্রস্তাব এলে প্রথমেই গল্প, পরিচালক নিজের চরিত্রের দিকে খেয়াল করেন। এখনো ব্যাটে-বলে মেলেনি। তাই বড় পর্দায় তাঁকে দেখা যায়নি। বলেন, সবকিছু মিলে গেলে কেন নয়! ‘আমি মূলত একজন শিল্পী। আমি তো সব মাধ্যমেই কাজ করতে চাই।’ কিন্তু চরিত্রের গভীরতা অবশ্যই দরকার।
বয়স হলো আট
জানতে চাই, ২০১০ থেকে ২০১৭—টানা আট বছর ধরে কাজ করার প্রাপ্তি কী? প্রশ্নটা শুনে কিছু একটা ভাবেন তিনি। তারপর বেশ গুছিয়ে নিয়ে বলেন, ‘অনেক পরিচালক আমাকে বলেন, এই চরিত্রটা তোমাকে ভেবে লেখা। এই চরিত্রটা তুমি না করলে আর নাটকটাই বানানো হবে না। আমার মনে হয়, একজন অভিনেত্রীর জীবনে এটাই বড় প্রাপ্তি।’
বলেন, এমনও হয়েছে শিডিউল দিতে না পারায় কোনো কোনো পরিচালক তাঁর জন্য ছয় মাসও অপেক্ষা করেছেন।
জানতে চাই, আট বছর চলে যাচ্ছে আর আট বছর পর নিজেকে কোথায় দেখতে চান? যথারীতি হাসেন তিনি। ‘আমার তেমন পরিকল্পনা নেই। কোথায় নিজেকে দেখব, সেসব নিয়ে ভাবিনি। কারণ, আমি নিজেকে কোনো প্রেসার দিতে চাই না। কখনোই বলি না, এই সময়ের মধ্যে আমার এই গাড়ি থাকতে হবে, এত টাকা থাকতে হবে, এই জায়গায় বাড়ি থাকতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, নিজেকে এই চাপটা দিলে একজন শিল্পীর শিল্পীসত্তা হারিয়ে যায়। আমি সেটা হারাতে চাই না।’
মেহ্জাবীনের কেমন পাত্র চাই
ক্রিয়েটিভ মানুষ অর্থাৎ সৃজনশীল মানুষ খুব পছন্দ মেহ্জাবীনের। যার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে পারবেন তিনি।
ফান লাভিং (মজার মানুষ) হতে হবে। কারণ নিজেকে খুবই ‘বোরিং’ ভাবেন তিনি।
সৎ হতে হবে। আর তাঁকে খুবই ভালোবাসতে হবে।
চেহারা হতে হবে মিষ্টি।

মেহ্জাবীনের সম্পর্কে গোপন তথ্য..
*  এখনো কারও বাংলা হাতের লেখা পড়তে পারেন না।
*  পারতপক্ষে শুক্রবারে শুটিং করেন না।
*  দিনের ২৪ ঘণ্টাই ফোন ‘সাইলেন্ট’-এ থাকে।
*   ফোনের রিংটোন, ভাইব্রেশন ও ফ্যানের ঘট ঘট শব্দে ফোবিয়া আছে।
*  স্বপ্নের চরিত্র টাইটানিক সিনেমার ‘রোজ’। ‘জ্যাক’ চরিত্রে লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিওকেই চায়।
*   বাবার চাওয়া মেহ্জাবীন একদিন চট্টগ্রামের মেয়র হবেন।
তাঁরা যা বলেন
মেহ্জাবীনের মধ্যে চরিত্রের গভীরে ঢোকার যে আগ্রহ, সেটা আমাকে মুগ্ধ করেছে। মেহ্জাবীন প্রস্তুতি নিয়ে তবেই ক্যামেরার সামনে দাঁড়ায়। আরও একটা বড় গুণ, ও গড্ডলিকাপ্রবাহে গা ভাসায় না। কোনটা করতে হবে, কোনটা ছাড়তে হবে, সেটা খুব ভালো জানে। একসঙ্গে পেশাদার, মেধাবী ও রূপবতী। এই তিনটার মিশ্রণের অভিনেত্রী আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে খুবই কম।
মাহফুজ আহমেদ
অভিনেতা ও নির্মাতা
আমার মনে হয়, মেহ্জাবীনের যদি নাটকের গল্পটা পছন্দ হয় তাহলে পুরোপুরি নিজেকে ঢেলে দেয়। একটা উদাহরণ দিই, আমি ওর সঙ্গে প্রথম কাজ করেছি ও রাধা ও কৃষ্ণ নাটকে। ওখানে ওর চারটি চরিত্র ছিল। মেহ্জাবীন পুরো গল্পটা শোনার পর শুটিংয়ের আগ পর্যন্ত প্রতিনিয়ত ফোন করে জানতে চায়, পোশাক বা সাজসজ্জা কী হবে। কী রকম গেটআপ হবে? এমনকি ও নিজে থেকেই নানা ধরনের গেটআপ পাঠিয়ে আমাকে বলত, ‘একটা চরিত্র কি এমন হতে পারে।’ আমার কাছে দারুণ লেগেছে ব্যাপারটি।
আশফাক নিপুণ
নাট্যনির্মাতা
আমি যে সময় হাজির হতে বলেছি এবং যে ধরনের কস্টিউম চেয়েছি সেই রকম করেই নির্দিষ্ট সময়ে হাজির হয়েছে মেহ্জাবীন। তবে আমার কাছে সবচেয়ে ভালো লেগেছে, কোনো কিছু নিয়ে বিভ্রান্ত বা দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছে, ও সরাসরি জিজ্ঞেস করে জেনে নেয়। আগে থেকেই চরিত্র নিয়ে যে আগ্রহ সেটা আমার ভালো লেগেছে। আমি মনে করি, ভালো গল্প ও চিত্রনাট্য পেলে মেহ্জাবীন সত্যিকারের পারফরমার হয়ে ওঠেন।

Comments

Popular posts from this blog

প্রিয়াঙ্কাকে ছাড়িয়ে দীপিকা

২০১৬ সালে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সাপ্তাহিক ‘ইস্টার্ন আই’য়ের জরিপে ‘এশিয়ার সেরা আবেদনময়ী নারী’র তালিকায় প্রিয়াঙ্কা চোপড়াকে হারিয়ে ১ নম্বর স্থান দখল করেন দীপিকা পাড়ুকোন। এ তালিকায় চারবার শীর্ষ স্থানে ছিলেন প্রিয়াঙ্কা। দীপিকা আবেদনময়ীর তালিকায় শীর্ষ স্থান দখল করলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এত দিন রানির আসনে ছিলেন প্রিয়াঙ্কা। এবার সে তালিকা থেকেও প্রিয়াঙ্কাকে হটিয়ে দিলেন ‘রানি পদ্মাবতী’ দীপিকা পাড়ুকোন। ফেসবুক, টুইটার ও ইনস্টাগ্রাম—তিন মাধ্যমেই প্রিয়াঙ্কাকে পেছনে ফেলেছেন দীপিকা। প্রিয়াঙ্কার ফেসবুক পেজের লাইকসংখ্যা ৩২ কোটি ৯৭ লাখ ১ হাজার ৪৪০, সেখানে দীপিকার ফেসবুক পেজের লাইকসংখ্যা ৩৪ কোটি ১৩ লাখ ৭ হাজার ৩৯। একইভাবে টুইটার ও ইনস্টাগ্রামেও এগিয়ে গেছেন দীপিকা। টুইটার ও ইনস্টাগ্রামে দীপিকার ফলোয়ার যথাক্রমে ২১ লাখ ১০ হাজার ও ২০ লাখ। প্রিয়াঙ্কার টুইটার ও ইনস্টাগ্রামে ফলোয়ার সংখ্যা ২০ লাখ ও ১৯ লাখ ৮০ হাজার।পরিষ্কারভাবে প্রিয়াঙ্কাকে পেছনে ফেলে এগিয়ে চলছেন দীপিকা। বেশ কিছুদিন ধরেই তাঁদের মধ্যে চলছে এই ঠান্ডা লড়াই। এ বছরের মাঝামাঝি ভারতের জনপ্রিয় পুরুষ ম্যাগাজিন ‘ম্যাক্সিম’-এর জরিপে প্রিয়াঙ্কা চো...

পা দুইটা আমার কাঁদের উপর তুলে ইংলিশ চোদা দেই

আকাশ আর মাঠ আর গ্রাম, যেদিকেই তাকায় সে কলকাতার বিচিত্র সব স্বপ্ন ছাড়া আর কিছুই দেখতে পায় না। সারাপথ এমনি স্বপ্ন দেখতে দেখতে শেষটা সন্ধ্যার কিছু আগে সে মার্টিনের ডেরা কদমতলা ইস্টিশানে গিয়ে পৌঁছোল।       যেখানে গিয়ে নামল  read more  Direct Link :  https://goo.gl/6dhLgQ

The Average Sex Time Is Not as Long as You'd Think

yes, it does seem as if everyone at the all-boys high school and the methadone clinic is complaining of little else. I know what you're thinking: If only we had the perceptions of 34 Canadian and American sex therapists on this. Well, good thing we do        "Canadian and American Sex Therapists' Perceptions of Normal and Abnormal Ejaculatory Latencies: How Long Should Intercourse Last?" coitus considered "adequate" lasted anywhere from three to seven minutes, not including the Pledge of Allegiance. For the more ambitious, seven to 13 minutes was considered a "desirable" length for intercourse. This data, from all the people who see therapists for sexual problems, corresponds closely to earlier studies, which put the average at five to seven minutes. (We can safely blame the two-minute discrepancy on the Canadians.) "Very few people have intercourse  per se  [Latin] that goes longer than 12 minutes," says sex therapist Barry W. McCarth...